পৃথিবীর গোলকাকার আকৃতির প্রমাণগুলি লেখো - edu bangla online

পৃথিবীর গোলকাকার আকৃতির প্রমাণগুলি লেখো

চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের ওপর পৃথিবীর ছায়া পড়ে। এই ছায়া গোলাকার দেখায়। কোনো গোলকাকার বস্তুর ছায়াই একমাত্র গোলাকার হয়। সুতরাং, পৃথিবীর আকৃতি গোলকাকার।

পৃথিবীর গোলকাকার আকৃতির প্রমাণগুলি লেখো

পৃথিবীর  গোলকাকার আকৃতি সম্পর্কিত প্রমাণ :

পৃথিবীর গোলকাকার আকৃতির প্রমাণগুলি লেখো
পৃথিবীর গোলকাকার আকৃতির প্রমাণগুলি লেখো


১)গোলাকার ছায়া : 

চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের ওপর পৃথিবীর ছায়া পড়ে। এই ছায়া গোলাকার দেখায়। কোনো গোলকাকার বস্তুর ছায়াই একমাত্র গোলাকার হয়। সুতরাং, পৃথিবীর আকৃতি গোলকাকার।

আরো পড়ুন : পৃথিবীর অভিগত গোলকাকৃতির সপক্ষে প্রমাণ দাও।

২) দূরবীক্ষণ যন্ত্র: 

দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা গেছে, সৌরজগতের সব গ্রহই গোলকাকার। পৃথিবী একটি গ্রহ, অতএব পৃথিবীর আকৃতি গোলকাকার হওয়াই স্বাভাবিক।


৩) সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত: 

পৃথিবী সমতল হলে ভূপৃষ্ঠের সর্বত্র একই সময়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হত। পৃথিবী গোলকাকার বলেই পূর্বের দেশগুলিতে আগে এবং পশ্চিমের দেশগুলিতে পরে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয়।


৪) জাহাজের দৃশ্য : 

সমুদ্রে একটি আশ্চর্য বাপার দেখা যায়। কোনো জাহাজ যখন সমুদ্র থেকে তীরের দিকে মেরে তখন প্রথমে জাহাজের মাণ্ডুল দেখা যায়, তারপর অর্ধেক জাহাজ এবং শেষে পুরো জাহাজটি দেখতে পাওয়া যায়। গোলকাকার পৃথিবীর গোলকাকার সমুদ্রপৃষ্ঠের জন্যই এরূপ ঘটে। 

গোলকাকার পৃথিবী
গোলকাকার পৃথিবী

পৃথিবী যদি সমতল হত, তাহলে জাহাজের সম্পূর্ণ অংশই একবারে দেখা যেত।

সমতল পৃথিবী
সমতল পৃথিবী


৫) দিগন্তরেখা: 

কোনো ফাঁকা মাঠ বা কোনো উঁচু জায়গার ওপর দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকালে মনে হয় আকাশ ও ভূমি যেন দূরে এক জায়গায় বৃত্তাকারে মিলিত হয়েছে। এই বৃত্তরেখাকে দিগন্তরেখা বলে। জাহাজের ডেকে, কিংবা পর্বতের চূড়া কিংবা এরোপ্লেন, যত ওপর থেকে দেখা যাবে ততই বৃত্তাকার দিগন্তরেখা বড়ো মনে হবে। পৃথিবী গোলকাকার বলেই এরুপ সম্ভব।

৬) ধ্রুবতারার অবস্থান : 

যখন ম্যাপ, কম্পাস ছিল না তখন। উত্তর আকাশের ধ্রুবতারা দেখে মানুষ দিক নির্ণয় করত। কিন্তু মজার ব্যাপার যতই উত্তর দিকে যাওয়া যাবে তারাটিকে ততই প্রতি রাতে ওপরের দিকে উঠতে দেখা যাবে। পৃথিবী গোল বলেই এমন হয়।

পৃথিবী যদি সমতল হত তাহলে তারাটিকে একই জায়গায় দেখা যেত। আবার পৃথিবীর গোলকাকৃতির জন্যই দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে প্রুবতারা দেখা যায় না।


৭) নাবিকদের ভূপ্রদক্ষিণ: 

1519 খ্রিস্টাব্দে পোর্তুগিজ ভূপর্যটক ম্যাগেলান চটি জাহাজ নিয়ে এবং পরে ড্রেক, কুক প্রমুখ নাবিকগণ জাহাজে যাত্রা শুরু করে ক্রমাগত পশ্চিম দিকে গিয়ে শেষ পর্যন্ত একই বন্দরে অর্থাৎ, যেখান থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন সেখানে ফিরে আসেন। এই ভূপ্রদক্ষিণের মাধ্যমে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, পৃথিবী সমতল নয়, বরং গোলকাকার।


৮) বেডফোর্ড লেভেল পরীক্ষা: 

1870 খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের বেডফোর্ড খালে এ.আর. ওয়ালেস সমান উচ্চতাবিশিষ্ট তিনটি খুঁটি ৭ কিমি অন্তর একই সরলরেখায় রেখে ভেলার সাহায্যে ভাসিয়ে দিয়ে দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখেন মাঝের খুঁটির মাথা প্রথম ও তৃতীয় খুঁটির মাথার চেয়ে সামান্য উঁচু হয়ে রয়েছে। পৃথিবী গোলকাকার বলেই এমনটি ঘটে।

যদি পৃথিবী সমতল হত, তবে তিনটি খুঁটি দেখার ক্ষেত্রে এরূপ পার্থক্য হত না, খুঁটির সম্পূর্ণ অংশ দেখা যাবে।

৯) প্রত্যক্ষ প্রমাণ: 

বর্তমানে ওপরের এইসব পর্যবেক্ষণ আর যুক্তির মাধ্যমে পরোক্ষ প্রমাণ আর দরকার পড়ে না। মহাকাশচারীরা মহাশূন্য থেকে স্বচক্ষে উজ্জ্বল নীল গোলকের মতো পৃথিবী দেখেছেন। কৃত্রিম উপগ্রহ, মহাকাশযান, এরোপ্লেন থেকে ছবি তুলেও দেখা গেছে, পৃথিবীর আকৃতি গোলকাকার।

আরো পড়ুন:

ষষ্ঠ শ্রেণির বিষয় 

আকাশ ভরা সূর্য তারা

Post a Comment