ভাষার জন্মকথা প্রশ্ন ও উত্তর - edu bangla online

ভাষার জন্মকথা প্রশ্ন ও উত্তর

বহুদিন পর্যন্ত ভাষা মুখে মুখে প্রচলিত ছিল। সেইজন্য সেই ভাষাকে বলা হয় মৌখিক বা কথ্য ভাষা। তারপর ধীরে ধীরে লেখার প্রয়োজন হলে, তখন তাকে বলা হয় লিখিত ভাষা

ভাষার  জন্মকথা


আমাদের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য আমরা কথা বলে থাকি। শুধু মানুষ কেন, জীবজগতের অনেকেই আকার-ইঙ্গিত বা ধ্বনির সাহায্যে মনের ভাব প্রকাশ করে থাকে। এদের মধ্যে একমাত্র মানুষই তার মনের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম, বহু বিচিত্র ভাবনা-চিন্তাগুলিকে সঠিকভাবে ব্যক্ত বা প্রকাশ করতে পারে। আর যার সাহায্যে মানুষ তা ব্যস্ত বা প্রকাশ করে, তাকে বলে ভাষা। 


ভাষার জন্মকথা প্রশ্ন ও উত্তর
ভাষার জন্মকথা প্রশ্ন ও উত্তর


কিন্তু মনের ভাব প্রকাশ করতে গিয়ে কেউ আধো-আধো অস্পষ্ট কিছু কথা উচ্চারণ করল। অথচ তার কোনো অর্থই বোঝা গেল না। এই কথাগুলি কিন্তু ভাষা নয়। অর্থবোধক শব্দ হল কথা। আর এই কথাই হল মানুষের ভাষা। ভাষার সাহায্যে মানুষ কথা বলে, কিংবা লিখে মনের ভাব প্রকাশ করে। 


ভাষাঃ যে শব্দ বা শব্দগুচ্ছের দ্বারা আমরা আমাদের মনের ভাবকে সুন্দরভাবে প্রকাশ করতে পারি, তাকে আমরা বলি ভাষা।


বহুদিন পর্যন্ত ভাষা মুখে মুখে প্রচলিত ছিল। সেইজন্য সেই ভাষাকে বলা হয় মৌখিক বা কথ্য ভাষা। তারপর ধীরে ধীরে লেখার প্রয়োজন হলে, তখন তাকে বলা হয় লিখিত ভাষা বা লেখ্য ভাষা


পৃথিবীতে কত দেশ। দেশে দেশে নানা ভাষার মানুষের বাস। গোষ্ঠী হল দল, সমূহ বা সমাজ। একই ধরনের জীবনযাত্রার ধারা মেনে ও একই ভাষায় কথা বলে এমন ছোটো কিংবা বড়ো দল বা সমাজের মানুষ নিয়ে হয় এক-এক ভাষার জনগোষ্ঠী । যেমন আমরা বাঙালিরা প্রধানত পশ্চিমবঙ্গে ,বাংলাদেশেত্রিপুরায় বেশি সংখ্যায় বাস করি। জীবনযাত্রার ধারায় আমাদের মধ্যে অনেকটাই মিল আছে এবং আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি। আমাদের নিয়ে যে জনগোষ্ঠী, তা বাঙালি জনগোষ্ঠী। ভারতে এরকম ওড়িয়া, অসমিয়া, তামিল, তেলুগু প্রভৃতি বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর বাস। প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর ভাষা আলাদা। যেমন ওড়িয়া জনগোষ্ঠীর ভাষা ওড়িয়া, তামিল জনগোষ্ঠীর ভাষা তামিল ইত্যাদি। আবার ভারতের বাইরে জাপানি জনগোষ্ঠীর ভাষা জাপানি, ইংরেজ জনগোষ্ঠীর ভাষা ইংরেজি ইত্যাদি।


বাঙালি শিশুরা জন্মের পর যে ভাষায় কথা বলে তার নাম বাংলা ভাষা। এই বাংলা ভাষা সংস্কৃত ভাষা থেকে সৃষ্টি হয়েছে। বাংলা ভাষাকে আবার কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।


উপভাষাঃ এক-এক অঞ্চলের বাঙালিদের মুখে এক এক রকম বাংলা ভাষা শোনা যায়। এই আঞ্চলিক ভাষাকে বলা হয় উপভাষা।


সাধুভাষা: যে ভাষা সংস্কৃত-ঘেঁষা এবং যে ভাষাতে ক্রিয়াপদ ও সর্বনাম পদের পূর্ণ-রূপ বর্তমান, গুরুগম্ভীর সেই লেখ্যভাষাকে সাধুভাষা বলে। উদাহরণ-মানব পিতার সহিত কলিকাতায় গিয়াছিল।


চলিত ভাষা: যে সহজ, সরল ভাষায় মানুষ মনের ভাব প্রকাশ করে থাকে, তারই লিখিত রূপ হল চলিতভাষা। চলিত ভাষায় ক্রিয়াপদ ও সর্বনাম পদের সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করা হয়। উদাহরণ-মানব বাবার সঙ্গে কলকাতায় গিয়েছিল।


ভাষার  জন্মকথা প্রশ্ন ও উত্তর


প্রঃ ভাষা কাকে বলে?

উঃ যে শব্দ বা শব্দগুচ্ছের দ্বারা আমরা আমাদের মনের ভাবকে সুন্দরভাবে প্রকাশ করতে পারি, তাকে ভাষা বলে।


প্রঃ কীভাবে ভাষা গড়ে উঠল?

উঃ মানুষের ভাব বিনিময়ের প্রয়োজনে ভাষা গড়ে উঠল।


প্রঃ কীভাবে আদিম মানুষ মনের ভাব প্রকাশ করত?

উঃ আদিম মানুষ নানা রকম আওয়াজ ও আকার-ইঙ্গিতের মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করত।


প্রঃ মাতৃভাষা কাকে বলে?

উঃ মানুষ যেখানে জন্মগ্রহণ করে এবং প্রথম থেকে যে ভাষায় কথা বলতে শেখে সেটাই তার মাতৃভাষা।


প্রঃ আমাদের মাতৃভাষা কী?

উঃ আমাদের মাতৃভাষা বাংলা।


প্রঃ বাংলা ভাষা কাকে বলে?

উঃ বাঙালি শিশুরা মায়ের কোলে থাকতে থাকতেই যে ভাষায় প্রথম কথা বলতে শুরু করে তাকে বাংলা ভাষা বলে।

Post a Comment